কংগ্রেসও মনমোহন সিংহের বিদায় বেলা আঁকড়ে ধরতে চাইছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গর্ভনর, দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পরপর দু’বারের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন জাতীয় কংগ্রেসের শেষ প্রদীপও।

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ দিল্লি আজ বৃষ্টিমুখর। আলবিদা মনমোহন সিংহ। আপামর ভারতবাসী আজ বিদায় জানাচ্ছে দেশের এক কৃতি সন্তানকে। কংগ্রেসও মনমোহন সিংহের বিদায় বেলা আঁকড়ে ধরতে চাইছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গর্ভনর, দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পরপর দু’বারের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন জাতীয় কংগ্রেসের শেষ প্রদীপও। তাই আর এক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিমা রাওয়ের মরদেহ কংগ্রেস সদর দফতরে না আনার ভুল চুকিয়ে এবার শিখ প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের শেষযাত্রা দলীয় কার্যালয় থেকেই শুরু করেছে কংগ্রেস।

সেখানে মেয়ে দমন সিংহকে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন গুরশরণ কৌর। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে শেষ বিদায় জানাতে এসেছেন ভারতে নিযুক্ত প্যালেস্টাইনের রাষ্ট্রদূত এলরাজেগ আবু জাজের। শোক বার্তা পাঠিয়েছেন আমেরিকার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। চরম সতর্কতা ও কড়া নিরাপত্তায় শুরু হয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শেষ যাত্রা। তাঁর মৃত্যুতে দেশ হারাল এক প্রকৃত দেশপ্রেমিককে।

দেশের অর্থনীতিকে আমুল বদলে দিয়েছিলেন অর্থনীতিবিদ প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। একশো দিনের কাজ শুরু হওয়া থেকে ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তি এমনকি তথ্য জানার অধিকার আইনের মতো অন্তত দশটি সিদ্ধান্ত ভারতকে শক্তিশালী করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি প্রয়াত হন।
আজ শনিবার বেলা বারোটায় নিগমবোধ ঘাটে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়। তাঁর মৃত্যুতে ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক চলছে দেশজুড়ে। রাষ্ট্রপতি ভবন-সহ দেশের সব সরকারি ভবন, দপ্তরে অর্ধনমিত থাকবে জাতীয় পতাকা। শুক্রবার বাতিল করা হয়েছে সমস্ত সরকারি অনুষ্ঠান। রাজনীতির বিশারদ ছাড়াও দেশ বিদেশের কূটনীতিকরাও স্বীকার করেন “অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার”-এর কৃতিত্বের কথা। কিন্তু ভারতের বর্তমান শাসকদল তাঁকে সেই মর্যাদা দিতে নারাজ।
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে ও মনমোহন সিংহের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে প্রথমে ফোনে ও পরে চিঠি দিয়ে রাজঘাটে তাঁর শেষকৃত্যের স্থলে স্মৃতি সৌধের জমি দিতে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদির সরকার দিনভর কিছু না জানিয়ে রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে জানান হয়, রাজহাটে নয়, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে নিগমবোধ ঘাটে। আকালি দল থেকে কংগ্রেস নেতারা তাঁর তীব্র প্রতিবাদ করে সমাজমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিয়ে লেখেন মনমোহন সিংহকে অপমান করা মানে শিখ সম্প্রদায়কে অপমান করা।
তবে এই প্রসঙ্গে কেন্দ্র স্মরণে এনেছে ২০১৫ সালের আইন। সেই আইনে বলা হয়েছিল রাজঘাটে কাউকে আলাদা করে স্মৃতিসৌধর জমি দেওয়া হবে না। সেই আইনের আওতায় পড়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীও।