
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ক্ষোভের আগুনে ফুঁসছে বিজেপি’র ঘর বারান্দা। উত্তর দিনাজপুর কিংবা মুর্শিদাবাদই নয় সারা রাজ্যের কোথাও না কোথাও বিজেপি কর্মীরা নবনির্বাচিত মন্ডল সভাপতিদের মেনে নিতে পারছেন না। কেউ প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন, কেউ গজরাচ্ছেন অন্তরে। সবক্ষেত্রেই অর্থের বিনিময়ে পদ দেওয়ার অভিযোগ উঠছে।
সমাজমাধ্যমে নিজের ওয়ালে দলের রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে দলীয় সিদ্ধান্তকে ধিক্কার জানিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের বিধায়ক সত্যেন্দ্রনাথ রায়। একটা লম্বা পোস্টে তিনি লিখেছেন, ” ৪১ নম্বর গঙ্গারামপুর বিধানসভার আজকে মণ্ডল সভাপতিদের নাম ঘোষণা করা হল। দেখলাম নির্বাচিত বিধায়কদের দল এ কোনো মূল্য নেই।”
সেখানে তিনি আরও লিখেছেন, ” আমি দেখলাম, করদহ, ভিকাহারের মণ্ডল সভাপতিকে আমি চিনিও না, জানিও না। আমার দলে সবাই জানে আমি শুধু বিধায়ক নই, আমি একজন সংগঠক। দলের অত্যন্ত পুরনো সংগঠকদের নাম দিয়েছিলাম মণ্ডল সভাপতি হিসাবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য DRO ও জেলা সভাপতি যে ! আমাকে গত বিধানসভায় যে হারানোর চেষ্টা করেছিল ,তার কথায় সভাপতি করেছে। কারণ তারা আগামী নির্বাচনে হারানোর চেষ্টা করবে। আমি ভীষণভাবে দুঃখিত ও সিদ্ধান্তকে ধিক্কার জানাচ্ছি। আসা করি দল নির্বাচন জয় এর স্বার্থে বিবেচনা করবে।” তিনি অবশ্য বিজেপির রাজ্য সভাপতির এলাকারই বিধায়ক।
বহরমপুরের বিধায়ক সুব্রত মৈত্রও একই দাবি করেছেন। তাঁর বিধানসভা এলাকায় নব নির্বাচিত মন্ডল সভাপতিদের নির্বাচনের ক্ষেত্রে তাঁর কোনও ভূমিকা নেই বলেই জানিয়েছেন। শুধু বহরমপুর নয়, মুর্শিদাবাদের বড়ঞা বিধানসভার নব নির্বাচিত মন্ডল সভাপতিদের মেনে নিতে নারাজ ওই এলাকার বিজেপি কর্মীরা। তাঁদের দাবি, এমন একজনকে সভাপতি নির্বাচন করা হয়েছে যে সবেমাত্র দলের প্রাথমিক সদস্য পদ গ্রহণ করেছে। অথচ বিজেপি’র সংবিধানেই নাকি আছে নূন্যতম তিনবছর প্রাথমিক সদস্য থাকলে তবেই দলে পদ পাবে কেউ। তবে বড়ঞার বিজেপি কর্মীরা শুধু তাঁদের সংগঠনের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে নয়, তাঁরা এই ‘চক্রান্তে’র ভাগীদার করেছেন বিজেপি বহরমপুর সংগঠনের বর্তমান জেলা সম্পাদক মলয় মহাজনকেও। তাঁর কুশপুত্তলিকাও পোড়ানো হয়েছে সোমবার।
যদিও মলয়ের দাবি, ” দলের মন্ডল সভাপতি যারা প্রস্তুত করে সেই দলের আমি কোনও সদস্য নই। কোথায় কে মন্ডল সভাপতি হবে সে ব্যাপারে যে কমিটি চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় আমি কোনওদিন তার সদস্য ছিলামও না। তাই আমাকে অযথা জড়ানো হচ্ছে। যারা বোঝেন না, তাঁরা এই কাজ করছেন ভুল তত্বে পরিচালিত হয়ে।” দলের বড়ঞা বিধানসভার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব মলয়ের। দলের কাছে বড়ঞা বিধানসভা একটি গুরুত্বপূর্ণ আসন। সেখানে মলয় ও শাখারভ নিজেদের গুটি সাজাচ্ছেন দলীয় নীতি নিয়মের তোয়াক্কা না করে। এই অভিযোগ তুললেও মলয় বৃত্তের দাবি,ভুয়ো অভিযোগ তুলছে তৃণমূলের হাতে তামাক খাওয়া দলেরই বিভীষণরা।
তবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে সংগঠনের এই ক্ষোভের কথা জানানো হলে তিনি বলেন, ” আমি সংগঠন দেখি না, তাই আমি এব্যাপারে কিছু বলতেও পারব না।”