সাংসদের চেয়ার আগলে থাকবেন ‘ভরত’রা

Social Share

বিদ্যুৎ মৈত্র, মুর্শিদাবাদঃ পোড় খাওয়া সাংসদ অধীর চৌধুরীকে হারিয়ে সংসদে যাওয়ার রাস্তা তৈরি করেছেন মাত্র কিছুক্ষণ আগেই। কিন্তু যে লোকসভার মানুষ বিজয়ীর তিলক এঁকে দিয়েছেন তাঁর কপালে তাঁদের প্রয়োজনে ইউসুফ পাঠানকে পাবেন না তাঁরা। সাংবাদিক সম্মেলন করে সে কথাই স্পষ্ট করেছেন বহরমপুরের নয়া সাংসদ। তিনি বলেন, “এখানে স্থায়ীভাবে থাকার তো কোনও প্রশ্নই নেই। আমার বাড়ি গুজরাতের বরোদায়। সেখানেই পরিবারের সঙ্গে থাকব। দিল্লিতে কাজের জন্য যাব। আর সেই কাজের মাঝে যদি সুযোগ পাই তাহলে এখানে আসব।”

আরও পড়ুনঃ বহরমপুরের ‘Cancel Cheque’ অধীর, সাংসদ ইউসুফ

বছর তিনেক আগে একুশের বিকেলেও বহরমপুর ছিল এমনই উদাসীন। মেরুকরণের রাজনীতি বিধানসভা থেকে সরিয়ে দিয়েছিল মনোজ চক্রবর্তীর মতো প্রবীণ নেতাকে। আজ অতীত হলেন বহরমপুরের আর এক ‘অভিভাবক’ অধীর চৌধুরী। এলাকাবাসীর দাবি, যাঁদের এক ডাকে পাশে পেতেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু নয়া বিধায়ক সুব্রত মৈত্রকে খুঁজতে হয় প্রয়োজনে। যাঁরা তাঁর ঘনিষ্ঠ বৃত্তের বাইরে থাকেন মূল অসুবিধা তাঁদের। তবু তাঁকে বহরমপুরের মধ্যেই পাওয়া যায়। সে কথা অবশ্য মানেন না সুব্রত।

আরও পড়ুনঃআইএসএফের থেকে NOTA-য় ভোট বেশি পড়েছে মুর্শিদাবাদের দুই আসনে

কিন্তু নতুন সাংসদ তো ধরাছোঁয়ার বাইরে, দাবি করলেন বহরমপুরের বাসিন্দা সরোজ হালদার। তবে তিনি আশাবাদী। বলছেন, “রাতবিরেতে ট্রেনের জরুরি টিকিট কাটাই হোক আর হাসপাতালে মুমুর্ষু রোগীকে ভর্তির জন্য সুপারিশ করার জন্য নেতাদের প্রয়োজন হয়। যেমন কাউন্সিলরদের পাই। এখানেও সাংসদ না থাকলে হয়ত তাঁর কোনও প্রতিনিধি থাকবেন। যাঁর কাছ থেকে সেই সুবিধা পাওয়া যাবে।” আর এক বাসিন্দা সৌমেন চক্রবর্তী বলছেন, ” এলাকার সাংসদ এলাকাতেই থাকবেন না যদি বলেন তাহলে আর কীই বলার থাকতে পারে? তবে ওঁর অফিস নিশ্চয় থাকবে সেখানে গিয়ে প্রয়োজন মেটাতে হবে।”

সাধারণত মানুষের দৈনন্দিন প্রয়োজনে একজন সাংসদকে দরকার পরে না। কিন্তু সাংসদকে খোঁজখবর রাখতেই হয় এলাকাবাসীর। সাংসদকে এলাকার ‘অভিভাবক’ হিসেবেই মান্যতা দেন মফঃস্বলের মানুষজন। তৃণমূলের অন্দরে অবশ্য ইউসুফের মন্তব্য নিয়ে দ্বি-মত দেখা দিয়েছে।

প্রকাশ্যে মন্তব্য এড়িয়ে গেলেও কেউ বলছেন “এখনই এই ধরনের কথা বলা উচিত হয়নি।” কেউ আবার বলছেন “ইউসুফ জেলায় না থাকলে পালা করে তাঁর প্রয়োজন মেটাবেন তৃণমূলেরই জেলা নেতারা। রাম ছাড়া কি ভরত রাজত্ব চালায় নি?” এক নেতার দাবি, “এখনতো এক ফোনেই দিল্লি আর লাহোর এক জায়গায় চলে আসে। নেতা কোন দূর?”

প্রাক্তন সাংসদ মইনুল হাসান, বর্তমান সাংসদ খলিলুর রহমান অবশ্য বলছেন অন্যকথা। মইনুলের মত “একজন সাংসদ সবসময়ের কর্মী”। খলিলুর বলছেন “একজন সাংসদকে জনসংযোগ রাখতেই হয়। ইউসুফ রাজনীতিতে নতুন তাই সহজ সরলভাবে কথাটা বলেছে। তবে ওকেও মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে।” হুমায়ুন কবীর বলছেন ” এলাকায় থাকা না থাকার ব্যাপারে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা আমাদের নেত্রী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নেবেন। আমার এখানে মন্তব্য করা ঠিক নয়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights