বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ একদিকে আরজিকর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক হত্যাকান্ডের বিচার চেয়ে পথে নেমেছেন বঙ্গবাসী। অন্যদিকে বন্যায় বিধ্বস্ত বাংলার একাংশ। যে বন্যাকে কেন্দ্রের ঘাড়ে চাপিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, পরিকল্পনা করে ডিভিসি থেকে জল ছেড়ে বাংলাকে ডোবানো হয়েছে। তা হওয়ায় আপাতত দুই চাপে বেকায়দায় রাজ্য সরকার। আজ বৃহস্পতিবার জুনিয়র চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য ভবনের সামনে থেকে ধর্ণা তোলার সম্ভাবনায় জল ঢেলে কর্মবিরতি চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরাও। আর এসবের মধ্যেই ধীর পায়ে এগিয়ে আসছে বাঙালির দুর্গোৎসব। তবে এবার আরাধনা হলেও উৎসবে মাততে চাইছেন না রাজ্যের একাংশ বাসিন্দার সঙ্গে বহরমপুরবাসীও। যদিও আয়োজনে খামতি রাখতে রাজি নয় পুজো উদ্যোক্তারাও।
তবে তথ্য বলছে পুজোর সময় ঘরে তো বটেই নিজের এলাকা, এমনকি রাজ্যতেই থাকবেন না রাজ্যের একাংশ বাসিন্দা। তাঁরা কেউ বাক্স প্যাঁটরা বেঁধে চলে যাচ্ছেন কাশ্মীর, কেউ যাচ্ছেন অযোধ্যা, কেউ বারাণসি, কেউ বা পুরী, কেউবা আরও দূরে। বহরমপুরের এক ভ্রমণ সংস্থার কর্ণধার গুপীনাথ দাস বলছেন, “অন্যবারের তুলনায় এবার মানুষের বেড়াতে যাওয়ার ধুম বেশি।” আর একটি ভ্রমণ সংস্থার কর্ণধার দেবকুমার ঘোষও বলেন তাঁর সঙ্গেও দেশের উত্তর-পূর্ব, উত্তরপ্রদেশে বেড়াতে যাচ্ছেন বহরমপুরের ভ্রমণ পিপাসু মানুষজনের একাংশ। দু’জনেই জানান পুরো অক্টোবর মাস জুড়েই ভিন রাজ্যে এমনকি ভিন দেশেও ঢুঁ মারবেন মুর্শিদাবাদ জেলার পর্যটকরা। তবে তাঁদের সেই তালিকায় নেই সিকিম। ডুয়ার্সেরও চাহিদা কম।
একইসঙ্গে রেলের হিসেবেও মিলছে বাঙালী এবারও পুজোয় ঘুরতে যাচ্ছেন বিদেশ বিভূঁই। টিকিট আর একটিও বাড়তি নেই বলেই পূর্বরেল সূত্রে জানা যায়। উড়ান পেলেও তার টিকিটের দাম আকাশছোঁয়া। স্বাভাবিকভাবেই হিসেবের খাতা নেড়েচেড়ে দেখলে স্পষ্ট হচ্ছে পুজোর বোধন থেকেই শহরবাসীর পায়ের তলায় সর্ষে। তবে ভ্রমণ পিপাসু হলেও এবার তাঁর বাইরে যেতে একটু খারাপ লাগছে বলেই দাবি করলেন অরিত্রিকা সান্যাল। তিনি বলছেন, “আমরা মে মাসে ট্রেনের টিকিট কেটেছি দার্জিলিং ও তার আশপাশ ঘুরে দেখব বলে। তখন এই আরজিকর কান্ড ঘটেনি। বিশ্বাস করুন এখন পুজোটাই ম্যারমেরে লাগছে। কিন্তু অতগুলো পয়সা খরচ করে ফেলেছি বলে বাতিল করতে খারাপ লাগছে।”
তবে আজকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘ কৃষি পর্যটন’ বিভাগে মুর্শিদাবাদের বরানগর গ্রাম কেন্দ্রের শ্রেষ্ঠ পর্যটন গ্রামের শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছে। চলতি মাসের ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবসে রাজ্য সরকারের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে বলে সূত্রের দাবি। রানী ভবাণী প্রতিষ্ঠিত একাধিক শিব মন্দির যেমন আছে তেমনি এখানে আছে একটি দুর্গা মন্দিরও। সেখানেও কী পুজোয় জেলাবাসী তথা বঙ্গবাসীর পা পড়বে? সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিচ্ছেন না এলাকাবাসী।