সংবাদ প্রতিনিধি, কলকাতাঃ তখনও রাত জাগা চোখ বিশ্বাস করতেই পারছে না সত্যিটা। একে অপরের চোখের দিকে তাকিয়ে সভয়ে জানতে চাইছেন ” কী বলছো? সত্যি?” আবছা হয়ে আসছে অন্ধকার। মাছের কারবারিরা ততক্ষণে নিজেদের ঠিকানায় আস্তানা নিয়েছে। নিজেদের খাতায় ততক্ষণে শেখ শাহাজাহানের ( Sheikh Shahjahan) নাম লিখে ফেলেছে পুলিশ। সকাল হতেই বিষয়টা পরিস্কার হল সন্দেশখালির মানুষদের। বিশ্বাস হল এতদিনের “ত্রাস” সত্যিই এবার পুলিশের জালে। হাসি ফুটতে না ফুটতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছিল সন্দেশখালির বাড়িতে বাড়িতে। তাদেরই একজন হাত মুঠো করে চিৎকার ছুড়ে দিল শূন্যে ” গরাদ থেকে এখন আর বেড়তে হচ্ছে না চাঁদু তোমাকে”। বেলা যত গড়াতে লাগলো ততই হাসি চওড়া হল বাসিন্দাদের। মিষ্টি বিতরণ থেকে নিষিদ্ধ শব্দ বাজি বাদ থাকলো কিছুই। স্বস্তির শ্বাস ফেললেন সকলে।
আরও পড়ুনঃ Sheikh Shajahan বুধবার রাতেই পুলিশের জালে
পুলিশ শাহজাহানকে গ্রেফতার করেছে। লাগু হয়েছে ভারতীয় দন্ডবিধির ১৪৭, ১৪৮ মতো জামিন অযোগ্য ধারা। আদালত ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। সিআইডি তদন্তভারও নিয়েছে। সব কিছুই শুনেছেন ওরা। চোখের পলক সরেনি টিভির পর্দা থেকে। তৃণমূলও ঘটনাক্রমে দল থেকে ধৃত শাহজাহানকে ছ’বছরের জন্য সাসপেন্ড করেছে। তবু সাদা জামা পরে পুলিশের সঙ্গে যে মেজাজে শাহজাহান বেড়িয়েছে তা দেখে অনেকে মনে মনে আতঙ্কিতও হয়েছে। “ওরা সব পারে” বলে মন্তব্যও করেছেন সাগর সর্দাররা। তাঁদের প্রশ্ন “সি আইডি তদন্ত করবে? ইডি, সিবিআই কেউ ওকে ধরবে না?”
তবে শাহজাহান গ্রেপ্তার হতেই সন্দেশখালি শুধু নয়, সারাদিন ফেসবুক, ইন্সটাগ্রামে চোখ রাখলে মনে হচ্ছে ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়েছে নেটিজনদেরও। কেউ লিখলেন “গদিচ্যূত সম্রাট শাজাহান (শাহজাহান)” কেউ লিখলেন “শাহজাহান চলে শ্বশুরাল” কেউ লিখলেন “পুলিশ পিঠে খাওয়াবে বলেই তো ধরা দিলাম” কেউ আবার প্রতিবাদ জানিয়ে লিখলেন ” যারা জমি কেড়েছিল তাদের শাস্তি হবে কবে?”
সন্দেশখালির ‘ডন’ শেখ শাহজাহানের বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বললেন, ” অন্ধকার টানেলের শেষে আলোই দেখা যায়।”