সংবাদ প্রতিনিধি,কলকাতাঃ কলকাতা থেকে কাঁথি অবৈধ নির্মাণ হয়েছে বাংলায়। গার্ডেনরিচকান্ডে দাবি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর। সোমবার মাঝ রাতে বেআইনি বহুতল ভেঙে বিপর্যয় হয় কলকাতার গার্ডেনরিচের ফতেপুর ব্যানার্জি বাগান লেনে। ইতিমধ্যে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। গ্রেফতার হয়েছে প্রোমোটার। জানা যায় দোতলা ভিতের উপর উঠছিল পাঁচ তলা বাড়ি। ইতিমধ্যে সেই বাড়ির ছাড়পত্র নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সমালোচনা শুরু হয়েছে মেয়র তথা এলাকার বিধায়ক ফিরহাদ হাকিমেরও। সেই প্রসঙ্গেই অধীর বলেন, ” গোটা কলকাতা জুড়ে লুঠ হচ্ছে। এখানে সব থেকে বেশি চুরি হয়, এখানে বেশি দুর্নীতি হয়, এখানে বেশি ঘোটালা হয়। তাই বিল্ডিং ভেঙে পড়ে। সারা বাংলায় কলকাতা থেকে কাঁথি এই লুঠ হচ্ছে।”
রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “তৃণমূল জলা ভরাট করে বহুতল নির্মাণের ছাড়পত্র দিয়েছে।” কলকাতায় এইরকম প্রায় আটশো বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে বলে তোপ দেগেছেন ফিরহাদের দিকে। গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন এলাকার কমিশনারেরও।
ফিরহাদ অবশ্য বলেন, ” আমরা নিয়ম শিথিল করার পরেও কিছু মানুষ বেআইনি নির্মাণের পথে কেন হাঁটছে জানি না।” তিনি গার্ডেনরিচ কান্ডে টেনে আনেন বাম আমলের প্রসঙ্গও। বলেন, ” এ সব এলাকায় বাম আমল থেকে বেআইনি নির্মাণ চলছে। কারণ, সে সময়ে প্রশাসনের কাছ থেকে নির্মাণের অনুমতি পাওয়া যেত না। অনুমতি জোগাড় করতে অনেক হেনস্থা হতে হত।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পুকুর ভরাট করে এই বহুতল নির্মাণ হচ্ছিল। যা নিয়ে ইতিমধ্যে ভোটের মুখে বিরোধীরা, সরকার তথা তৃণমূলের সমালোচনায় সরব হয়েছে। ফতেপুর ব্যানার্জি বাগান লেনের ঝুপড়ির লাগোয়া পাঁচ তলা বাড়ি তৈরি হচ্ছিল। রবিবার ঢালাইয়ের কাজ শেষে মাঝরাতে হুড়মুড়িয়ে সেটিই ভেঙে পড়ে। ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে এখনও পর্যন্ত সাত জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন।
অসুস্থ অবস্থায় ঘটনাস্থলে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুজিত বসু ও দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ মালা রায় তাঁর সঙ্গে ছিলেন। যদিও তার আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। ঘটনাস্থলে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”রমজান মাসে এমন একটা দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ায় আমরা সকলে অত্যন্ত মর্মাহত। অত্যন্ত ঘিঞ্জি এলাকা এটা এবং বেআইনি কাজের জন্য এই ঘটনা ঘটল। উদ্ধারকাজ দ্রুত হচ্ছে।”
নিহতদের পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ১ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করা হয়েছে।