সংবাদ প্রতিনিধি, কলকাতাঃ রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনে ‘ধর্ম নিরপেক্ষ’ দলগুলিকে নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপিকে হারাতে বৃহত্তর মঞ্চ তৈরি করে লড়াই করতে চেয়েছে বামফ্রন্ট। তাদের ডাকে সাড়া দিয়েছে কংগ্রেস। আইএসএফ কী করবে তা এখনও ঠিক করে নি তারা।
আর সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে রাজ্যের ৪২টি আসনে সমঝোতায় যেতে চাইছে ফ্রন্ট। ঘর সামলে অতিথিকে সুযোগ দিতে গিয়ে কোথাও কোথাও পিছিয়ে আসতে হয়েছে সিপিএমকেও দাবি সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্বের। কিন্তু কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। কোচবিহারে বামফ্রন্টের প্রার্থী হয়েছেন শরিক দল ফরওয়ার্ড ব্লকের নীতীশচন্দ্র রায়। আলিপুরদুয়ার আসনটি আর এক শরিক আরএসপিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে মিলি ওঁরাওকে প্রার্থী করেছে বামেরা। সিপিএম ছাড়া তাদের শরিক দলকে গুরুত্ব দিতে নারাজ কংগ্রেস, তাই ওই দুই আসনে কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে বলে দাবি শরিকদের। স্বাভাবিকভাবেই বামেদের অন্দরে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বাংলায় প্রথম দফার প্রার্থী ঘোষণা করল কংগ্রেস
স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যের জেলায় জেলায় বামফ্রন্টের প্রধান শরিকদল ফরোয়ার্ড ব্লক, আরএসপি, সিপিআই যার যেখানে শক্তি আছে সে সেখানে লড়াই করতে চায়। এই দাবি উঠতে শুরু করেছে। এর ফলে বামফ্রন্টে ফাটল ধরছে বলে আলোচনা সর্বত্র। তবে তা মানতে চাইছেন না রাজ্য নেতা বিমান বসু, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়রা। বিমানবাবুর পাশে বসেই স্বপন সঞ্জয়রা বলেন, কংগ্রেস নিয়ে আমরা আমাদের বক্তব্য বামফ্রন্টে আলোচনা করেছি। ৪৮ বছর ধরে এই বামফ্রন্ট চলছে। আরও বহু বছর ধরে এই ফ্রন্ট চলবে। আর তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই।”
তা অবশ্য অস্বীকার করেননি বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। তিনি বলেন, ” চুড়ান্ত তালিকা তৈরির আগে আলোচনা করতে চাইছি। আলোচনার সুযোগ আছে বলে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেব এটা হবে না। বামফ্রন্টের প্রার্থী তালিকার পরেও কংগ্রেস সেখানে প্রার্থী দিয়েছে। আশা করি তাঁরা এই ব্যপারে পুনরায় সিদ্ধান্ত নেবেন বৃহত্তর স্বার্থে।” তিনি এটাও বলেন, ” আমরা ব্যাতিক্রম আসনগুলি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে পারব।”
শুক্রবার রাজ্যের আরও দুটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন বিমান বাবুরা। আরামবাগে বিপ্লব কুমার মৈত্র আর ঝাড়গ্রাম সোনমণি টুডু। ৩১ তারিখের মধ্যে চুড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করবার চিন্তাভাবনা চলছে বলে দাবি করেও বিমান বাবু বলেন, “রাজনীতি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি নয় একটু সময় লাগছে।”এই নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিমান বাবু বলেন, ” চুড়ান্ত তালিকা তৈরি হলে এই ধোঁয়াশা কেটে যাবে।” তিনি আরও বলেন, “২০২৬ সালে ২৯৪টি আসনের নির্বাচন। সেই দিকে লক্ষ রেখে তৃণমূল বিজেপি’র দ্বিমেরু লড়াই ভাঙতে চাই। তাহলে নতুন পথে চলতে হবে। ২০১১ সালের পরে এই ভাবনা ভাবতে হচ্ছে। তা করতে একটু সময় লাগে। একটু পরিশ্রম করতে হয়। মেনে নিতে হয়।”