বিক্রি হয়ে গেল ‘এই সময়’

Social Share

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাজ্যের আরও একটি দৈনিকের মালিকানা বদল হয়ে গেল। Tidings Media and Communication Private Ltd জনপ্রিয় দৈনিক “এই সময়”-এর বর্তমান মালিক। তিন মালিকের এই কোম্পানির অন্যতম মালিক এক সরকারি আইনজীবী। যিনি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। এর আগে তৃণমূল জমানায় এই রাজ্যের আর এক দৈনিক ‘আজকাল’ পত্রিকার মালিকানাও পাল্টে গিয়েছে।

‘এই সময়’র নতুন মালিক সুপ্রীম কোর্টে রাজ্যের সিনিয়র স্থায়ী আইনজীবী সঞ্জয় বসু । তাঁর সঙ্গে যৌথভাবে মালিকানায় আছেন হিমাদ্রি স্পেশালিটি কেমিক্যাল লিমিটেডের মালিক অনুরাগ চৌধুরী। যাঁরা Tidings Media and Communication Private Ltd  এই কোম্পানির সবচেয়ে বড় অংশীদার। সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থার দাবি, মে মাসের ৯ তারিখ ‘এই সময়’ অধিগ্রহণের সময় শূন্য ব্যালেন্সের এই কোম্পানির বয়স ছিল মাত্র এক মাস।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের মার্চ মাসে চিটফাণ্ড কেলেঙ্কারীতে জড়িত থাকার সন্দেহে ইডি তল্লাশি চালিয়েছিল সঞ্জয়ের বাড়িতে। ইডি-র প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, পিনকন ও টাওয়ার গোষ্ঠী নামে দুই ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে ইডি ওই আইনজীবীর বাড়িতে তল্লাশি চালায়। গোয়েন্দারা তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে জেরাও করে। সেই সময় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের এই অভিযানকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় “রাজনৈতিক প্রতিহিংসা” বলে নিন্দা করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন যে ইডি আধিকারিকরা সঞ্জয়ের বাসভবনে কিছুই খুঁজে পাননি। 

বাংলায় ২০১২ সালে দেশের সবচেয়ে বড় সংবাদগোষ্ঠী টাইমস গ্রুপের “এই সময়”এর পথ চলা শুরু হয়। পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ছিলেন সুমন চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে এই পত্রিকার সম্পাদক হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়। সংবাদ দুনিয়ায় একশো বছর ধরে আধিপত্য বজায় রাখা আনন্দবাজার পত্রিকাকে শুরুতে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছিল ‘এই সময়’। বাংলা সংবাদমাধ্যম বিশেষ করে বাংলা খবরের কাগজ থেকে যুব সমাজ চোখ ফিরিয়ে নেওয়ায় সংবাদ জগতের বৃহত্তর আঙিনায় ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়েছে বাংলা দৈনিকগুলি। সেই সময় মূলত যুব সমাজকে সংবাদপত্রের পাতায় টেনে আনতে নতুন নতুন বিভাগ যেমন চালু হয়েছিল তেমনি সংবাদ ভাষ্যেও আধুনিকতা এনেছিল এই সংবাদপত্র। সূত্রের দাবি, দৈনিক ১.৭ লক্ষ কাগজ সেই সময় বিক্রি হত বাংলায়।

হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলেও তা খুব একটা বদলায়নি। কিন্তু যতদিন গিয়েছে ততই প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছিল এই সময়। সূত্রের দাবি, নতুন নিয়োগ তো ছিলই না। উল্টে সুনসান হচ্ছিল পত্রিকা দফতর। নতুন বিভাগ তো দূর অস্ত, বন্ধ হয়ে যায় একসময়ের জনপ্রিয় রবিবারোয়ারি। তবু অন্য বাংলা সংবাদপত্রের থেকে অন্য ধরনের খবর, বাংলা কাগজে হিন্দি ও ইংরেজি মিশিয়ে সংবাদ শিরোনাম, যা মূলত যুব সমাজের মুখের ভাষা তাকে প্রাধান্য দিয়ে তবু নিজেকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছিল টাইমস গ্রুপ্রের এই সময়। গত এক বছর ধরে সেই পত্রিকা বিক্রি করবার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থার দাবি।

সংবাদপত্রের সম্পাদক বদল না হলেও আগামীদিন এই পত্রিকার পথ বদল হয় কি না সেই দিকেই তাকিয়ে বাঙালি পাঠক।

আরও পড়ুনঃ ভাগীরথীর দু’পারে উড়ল দুটি নাম, অধীর না নির্মল?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights