চিকিৎসকের মৃত্যুর তদন্তের দাবিতে গজরাচ্ছে বাংলা, দেহ বাড়ি পাঠাতে পুলিশের এত তাড়াহুড়ো কেন?

Social Share

সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ খোদ কলকাতায় প্রাণের দাম নেই। তাও এলেবেলে বা ফুটপাতে পড়ে থাকা প্রাণ নয়। একেবারে গমগম করা আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের মধ্যে একটি তরতাজা মেয়েকে রাতের অন্ধকারে কেউ ‘খুন’ করে চলে গেল নিঃশব্দে। যে তথ্য মানতে কার্যত অপারগ রাজ্যবাসী। অথচ এমনটাই ঘটেছে সেখানে। মৃত চিকিৎসকের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগণার পানিহাটিতে। সেখানকার বিধায়ক নির্মল ঘোষও বলেন, “মেয়েটিকে বিভৎসভাবে খুন করা হয়েছে।” আর অস্বাভাবিক মৃত্যু হল যাঁর, তাঁর বাবা-মা কে ফেলে রেখে ময়নাতদন্ত শেষে তড়িঘড়ি পুলিশের গাড়ি ছুটল পানিহাটি, তার বাড়ির দিকে? কেন? কিসের এত তাড়া প্রশ্ন তুললেন বিক্ষুব্ধ চিকিৎসক, রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীরা তো বটেই। ক্ষোভে ফেটে পরে মৃতের বাবা বলেন, “মৃতদেহ নিয়ে পুলিশ কোথায় চলে গেল জানি না।” কলকাতা পুলিশ ভারপ্রাপ্ত জয়েন্ট সিপি ক্রাইম মুরলীধর শর্মার নেতৃত্বে সিট গঠন করে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।

শুক্রবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ যখন ওই তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধার হয় কলেজের সেমিনার হল থেকে তখন অবশ্য ‘খুন’এর তত্ব সামনে আসেনি। শোনা গিয়েছিল কাজের চাপে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। বেলা যত বাড়তে লাগল, ততই পরিস্কার হল বিষয়টি। যাঁরা ওই তরুণীর নিথর দেহ দেখেছেন তাঁরা বলেছেন, সেই সময় তাঁর গায়ে পোশাক ছিল না বললেই চলে। সারা গা ক্ষতবিক্ষত। ময়না তদন্তের রিপোর্ট জানিয়ে দিল মেয়েটির গলার হাড় ভেঙে গিয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সাধারণত গলা টিপে শ্বাসরোধ করে মারলে তবেই গলার হাড় ভেঙে যেতে পারে। শুধু তাই নয়। শ্বাসরোধ করে মারার কথা রিপোর্টে উল্লেখ করে বলা হয়েছে চোখ দিয়ে ঠিকরে বেড়িয়ে আসছে রক্ত। যৌনাঙ্গ থেকে বেড়িয়ে আসছে ‘Fluid’. সেমিনার হলের যে ম্যাট্রেস থেকে ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল, সেই ম্যাট্রেসেও রক্তের দাগ লেগে আছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। যা দেখে বিশেষজ্ঞদের মত, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে ওই তরুণী চিকিৎসককে। সেই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবিতে ধর্ণায় বসেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।

যদিও ময়না তদন্তের রিপোর্ট নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বাম যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন “যে হাসপাতালে মেয়েটির ডেড বডি পাওয়া গেল সেই হাসপাতালে মেয়েটির ময়নাতদন্ত কী করে হতে পারে? খুনও হবে আমারই হাসপাতালে আর আমিই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ঠিক করে দেব?” মৃত চিকিৎসকের পরিবারের লোকজনের সঙ্গেও কথা বলবার সুযোগ দেওয়া হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি। বাম যুব সংগঠনের নেতা-নেত্রী ছাড়াও এদিন বিক্ষোভরত চিকিৎসক পড়ুয়ারা শববাহি শকট আটকানোর চেষ্টা করলেও পুলিশ সেই বাধা টপকেই এগিয়ে গিয়েছে পরিকল্পনা মতো। যদিও এই ঘটনায় রাজ্য জুড়ে ক্ষোভ বিক্ষোভ শুরু হয়েছে চিকিৎসক মহলে। মৃত চিকিৎসকের বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি তুলেছেন তাঁরা।

আরও পড়ুনঃ খালেদা পুত্রকে টেক্কা দিতেই রাজনীতিতে আগ্রহ হাসিনা পুত্রের?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights