
সংবাদ হাজারদুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি গেল এক শিক্ষকের। বুধবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এই নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, হাওড়া শিবপুর দিনবন্ধু ইন্সটিটিউশনের জীববিদ্যার ওই শিক্ষক শেখ সিরাজুল ইসলাম ২৪ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন। এই সময়ে তিনি যে বেতন পেয়েছেন তাও তাঁকে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সিরাজুল বর্তমানে তৃণমূলের শিক্ষক সেলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর একজন।
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ভুয়ো শিক্ষক সিরাজুল দূর্নীতির আশ্রয়ে চাকরি পেয়েছেন। অবৈধভাবে ওই শিক্ষক নিয়োগ হয়েছেন বলেও জানান বিচারপতি মান্থা। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ এই দুর্নীতির তদন্ত করবে বলেও এদিন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু সোমা রায়ের মামলার শুনানি চলাকালীন ভুয়ো শিক্ষক খুঁজে বের করতে তিনজনের একটি কমিটি তৈরি করে দেন। তাদের একজন রাজ্যের শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক আধিকারিক, স্কুল সার্ভিস কমিশনের এক আধিকারিককে নিয়ে সেই কমিটি তৈরি হয়। ওই কমিটিই সিরাজুলকে খুঁজে বের করে।
বাম আমলে চাকরি পেলেও ওই শিক্ষক নেতার বিরুদ্ধে ২০১০ সালেই মামলা হয়। কিন্তু পরিবর্তনের হাওয়ায় তা ধামাচাপা পড়ে যায়। আর সিরাজুলও শাসক দলে নাম লিখিয়ে ক্রমে প্রভাবশালী নেতা হিসেবে হাওড়ায় নিজেকে পরিচিত করে তোলেন। হাইকোর্ট সেই সময়ই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেও কীভাবে ওই শিক্ষক এতোদিন চাকরি করলেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বিচারপতি বসু তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআরের নির্দেশ দিলেও তিনি ডিভিসন বেঞ্চে মামলা করেন। এদিন বিচারপতি মান্থা পাঁচ মিনিটের মধ্যেই তাঁর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
তবে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ ছিল। তা স্বত্তেও কীভাবে তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে ওই শিক্ষক স্থান পেলেন তা নিয়েও ফের তৃণমূলের শিক্ষক সেলের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক নেতা বলেন, ” আমরা প্রথম থেকেই বলেছি এই কমিটিতে এমন অনেকেই আছেন যাঁরা দলের পক্ষে ক্ষতিকারক। বারবার বলা স্বত্তেও রাজ্যের নেতারা এইসব অভিযোগ কানে তুললে আজকের মতো মুখ পুড়তো না।”