নবীন বরণে ফুড ফেস্টিভ্যাল খড়গ্রামের স্কুলে

Social Share

একেবারে টেবিল সাজিয়ে স্কুলের নির্দিষ্ট পোশাকের সঙ্গে মুখে মাস্ক, মাথায় টুপি হাতে গ্লাভস পড়ে খাবার পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত ছিল পড়ুয়ারা।

সংবাদ হাজার দুয়ারি ওয়েবডেস্কঃ চড়ুইভাতি এখন আর কেউ বলে না। বলে পিকনিক। শীত আসলেই মন চলে যায় সূদূরে। বন্ধু জুটিয়ে কখনও বাড়ির কাছাকাছিও হয়ে যায় বনভোজন। আর তার উদ্যোগ যে সবসময় পাড়া থেকে বা ক্লাব থেকে হয় তা নয়। স্কুল কলেজেও পড়ুয়া ও শিক্ষকদের নিয়ে শীতকালে এইরকম আয়োজন হয় দূরে কিংবা কাছে, নিদেনপক্ষে স্কুল বা কলেজের চৌহদ্দিতেও।

জানুয়ারীর গোড়ায় স্টুডেন্টস উইকের শেষদিনে খড়গ্রাম উত্তর চক্রের খাসপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় পিকনিকের মতোই আয়োজন করেছিল ফুড ফেস্টিভ্যালের। চলতি বছর স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া ভর্তি হয়েছে। সেই পড়ুয়ারা প্রাক প্রাথমিকের নবীন পড়ুয়াদের আহবান জানাল এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে। তাঁদের সঙ্গে হাত লাগিয়েছিল চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়ারা। চাউমিন থেকে মিহিদানা সব কিছুর আয়োজন ছিল। এমনকি পছন্দ হলে পেয়ারা, কিংবা চকোলেটও নিতে পারতেন তাঁদের কাছ থেকে। মিড ডে মিলের টাকা কিছুটা বাঁচিয়ে অতিরিক্ত খরচা শিক্ষকরা নিজেদের পকেট থেকে কিনে দিয়েছিলেন কাঁচামাল। সেই কাঁচামাল রেঁধে দিয়েছেন মিড মিল-এর রাধুনীরাই।

একেবারে টেবিল সাজিয়ে স্কুলের নির্দিষ্ট পোশাকের সঙ্গে মুখে মাস্ক, মাথায় টুপি হাতে গ্লাভস পড়ে খাবার পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত ছিল পড়ুয়ারা। তার আগে অবশ্য হাত স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছিল খাদ্য মেলায়। বুফে ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন স্কুলের শিক্ষকরাই। খাদ্য উৎসবে উপস্থিত অভিভাবকরাও চেখে দেখলেন প্রায় প্রত্যেকটি টেবিল। গুণমানেও শংসাপত্র পেয়েছে সেই পড়ুয়ারাই। এসবের সঙ্গে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। সব মিলিয়ে একটু অন্যরকমভাবে দিনটি পালন করতে পেরে খুশি পড়ুয়ারাও। শিক্ষকদের ধন্যবাদ দিলেন অভিভাবকরাও।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক গোপীনাথ মুখোপাধ্যায় সহ তিনজন স্থায়ী শিক্ষক আছেন। একজন পার্শ্ব  শিক্ষক। আর মোট পড়ুয়া ২২৮ জন। গড়ে প্রতি ক্লাসে চল্লিশ জন। এই স্কুলে ছেলেমেয়েদের পাঠাতে অভিভাবকদের কোনও দ্বিমত নেই। স্কুল থেকে পাশ করে ওরা যায় পাশে এক কিলোমিটার দূরে ঝিল্লি হাইস্কুলে। প্রধান শিক্ষক বলেন, ” আমাদের ঘরের অভাব রয়েছে, স্কুল পরিচালনা করতে আর্থিক তহবিলের প্রয়োজন, কিন্তু আমাদের পড়ুয়াদের মধ্যে আনন্দের অভাব কোনও অভাব নেই।”

খড়গ্রামের যে এলাকায় স্কুল সেই স্কুলকে ঘিরে থাকা নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানরাই এখানে আসে লেখাপড়া শিখতে। কেউ কেউ প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়াও। তবে স্কুলে জরুরী অসুবিধা একটাই। স্কুলের দু’পাশে দু’টি পুকুর। স্কুলের মধ্যেই ঢুকে পড়ে গরু, মোষ। নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা নেই। প্রধান শিক্ষক বলেন, “স্কুলের চারপাশে একটা পাঁচিল থাকলে এই ভয়টা আর থাকত না স্কুলের পড়ুয়াদের।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights